ইউএফও
বিজ্ঞানীদের গবেষণার আরও একটি অধ্যায় হলো মহাকাশ নিয়ে। এই মহাকাশে কোনো বুদ্ধিমত্তা আছে কি না সেইসব নিয়েও গবেষণার শেষ নেই। সেই গবেষণা অধ্যায়েরই একটি পৃষ্ঠা হলো, ইউএফও। রহস্যময় এই ইউএফও নিয়ে এবারের আয়োজন
ধারণা
আনআইডেন্টিফাইড ফ্লাইং অবজেক্ট (ইউএফও), এমন একটি উড়ন্ত বস্তু যা তার প্রত্যক্ষদর্শী দ্বারা এবং তদন্ত করার পরেও শনাক্ত করা যায় না। সহজ ভাষায় আকাশে দৃশ্যমান যেকোনো অচেনা অজানা বস্তু বা আলোকেই ইউএফও বলা যায়। এই সংজ্ঞা অনুসারে, একটি ইউএফওকে বিমান হিসেবে শ্রেণীভুক্ত করা যায়, যে এইটি এর পরিচয় দেওয়ার পূর্বেই বিমান নিয়ন্ত্রণকারী রাডারগুলোতে হঠাত্ আবির্ভূত হতে দেখতে পাওয়া যায়।
সাধারণ ভাষায় এবং কল্পনায় অশনাক্ত উড়ন্ত বস্তু বলতে বোঝায় ভিন্ন গ্রহ হতে আগত বুদ্ধিমান জীব। উড়ন্ত পিরিচ বা প্লেট হিসেবেও ১৯৪০-১৯৯০ সালে এই বিষয়টা খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। কারণ, যে সব অশনাক্ত উড়ন্ত বস্তু আকাশে দেখতে পাওয়া যেত তার বেশিরভাগ উড়ন্ত বস্তুগুলো পিরিচ বা প্লেটের আকৃতির হয়ে থাকত। যারা অশনাক্ত উড়ন্ত বস্তু বিষয় নিয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণা করে তাদেরকে উফোলোজিস্ট বলে।
উফোলোজিস্টদের মতে, ইউএফও বলতে আকাশ বা মহাশূন্যের পর্যবেক্ষকরা যেসব অপ্রাকৃতিক বা অজানা বস্তু দেখা পায় সেগুলোকে বোঝায়। এগুলোকে কোনো কর্তৃপক্ষ বা বিশ্লেষক কৃত্রিম বস্তু (কৃত্রিম উপগ্রহ, যানবাহন, বেলুন) অথবা প্রাকৃতিক বস্তু (উল্কা, গ্রহ, উল্কা বৃষ্টি, প্রাকৃতিক কারণ) হিসাবে চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছিল। আর যে উড়ন্ত বস্তু বা ইউএফওগুলো সমুদ্রপৃষ্টের উপর দেখতে পাওয়া যায় তাকে ভাসমান বস্তু বা আনআইডেন্টিফাইড সাবমারজড অবজেক্টস বলা হয়। যদিও পূর্বে এমন বস্তু দেখেছে বলে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পরেই ১৯৪৭ সালের ২৪ জুন ইউএফওর জন্ম ধরা হয়। সাম্প্রতিক বছরে, ইউএফওয়ের দুটি গুরুত্বপূর্ণ জাদুঘর বানানো হয়েছে। একটি হলো রোসওয়ালের আন্তর্জাতিক ইউএফও জাদুঘর (আমেরিকা) এবং অপরটি হলো এর শাখা ইস্তামবুলে (তুরস্ক)।
ইতিহাস
ইউএফও নিয়ে অনেক সময়ে অনেক গবেষণা প্রতিবেদন বের করা হয়েছে।
এদের মধ্যে কিছু ছিল নিঃসন্দেহে প্রাকৃতিক জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত :ধূমকেতু, উজ্জ্বল উল্কা, একটি বা পাঁচটি গ্রহ যা খালি চোখে দেখা যায়, অথবা বায়ুমণ্ডলীয় দৃষ্টিবিভ্রন্ত আলোমালা যেমন প্রতিসূর্য এবং লেন্স অকৃতির মেঘমালা। একটি উদাহরণ যেমন হ্যালির ধূমকেতু, যেটি চীনের জ্যোতির্ির্বজ্ঞানীরা সম্ভবত খ্রিস্টপূর্ব ২৪০ বছর অথবা ৪৬৭ বছর আগে প্রথম রেকর্ড করে ছিল। তাদের প্রকৃত কারণ ইতিহাসজুড়ে অপ্রাকৃতিক, স্বর্গদূত, অথবা অন্যান্য ধর্মীয় পূর্বাভাস বলে মনে করেছে। মধ্যে যুগে কিছু বস্তু চিত্রাঙ্কন করা হয়েছে যা দেখলে মনে হতে পারে অনুরুপ আকর্ষণীয় ইউএফও। মধ্যে যুগে এবং নবযুগের অভ্যুদয়ের সময় এমন অন্যান্য চিত্রাঙ্কনগুলোকে ইতিহাসবিদরা প্রায়ই ধর্মীয় প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত করত। সেন কুও, চীন সরকারের একজন পণ্ডিত ব্যক্তি, আবিষ্কারক, তিনি অশনাক্ত উড়ন্ত বস্তু সম্বন্ধে তার লেখা ‘ড্রিম পুল এসেস’ (১০৮৮) বইতে একটি জীবন্ত অনুচ্ছেদ লিখেছিলেন। ১১তম শতাব্দীতে আনহুই এবং জিয়াংসু নামের দুইজন প্রত্যক্ষদর্শীর প্রমাণ লিপিবদ্ধ করা হয়েছিল। তারা রাত্রি বেলা একটি দরজা বিশিষ্ট উড়ন্ত বস্তু দেখেছিল যার দরজার আভ্যন্তরীণ থেকে আগত উজ্জ্বল আলো গাছগুলো থেকে ছায়া দূর করে প্রায় দশ মাইল ব্যাসার্ধ জায়গাজুড়ে আলোকিত করেছিল এবং প্রচণ্ড গতিতে তার নিজ স্থান থেকে উড়ে গিয়েছিল।
আধুনিক প্রতিবেদন
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে থেকে মূলত ইউএফও দেখা শুরু হয়েছিল, একজন বিখ্যাত মার্কিন ব্যবসায়ী ক্যাননেথ আরনোড মধ্যে ২৪ জুন ১৯৪৭ সালে যখন তার ব্যক্তিগত প্লেন ওয়াশিংটন এর রাইনার পর্বতমালা কাছে দিয়ে উড়ছিল। তিনি বলেছিলেন, নয়টা অতি উজ্জ্বল বস্তু রাইনারের দিকে মুখ করে উল্টো পাশে উড়ছিল। একই রকমের বস্তু ১৯৪৭ সালে আমেরিকাতে আরও দেখা গিয়েছিল।
আরনোডর এই বিষয়টি প্রথম জনগণের দৃষ্টি আর্কষণ করেছিল। আরনোড বর্ণনা করেছিল, যা দেখেছিল ‘একটি পিঠার মতো চ্যাপ্টা’, ‘প্লেটের মতো আকৃতির এবং এত পাতলা ছিল যে ঠিকমতো দেখা যাচ্ছিল না’, ‘অর্ধেক চাঁদ আকৃতি, পিছনের দিক চ্যাপ্টা ডিম্বাকার এবং সামনের দিক উত্তল।..... মনে হচ্ছিল একটা বড় ফ্লাট ডিস্ক এবং এমন ভাবে উড়ছে যেন একটা চারা পানির উপর লাফাচ্ছে।’ অল্প দিনের মধ্যে আরনোডের উড়ন্ত বস্তু বা উড়ন্ত প্লেটের বিষয়টি অনেক দূর পর্যন্ত চলে গিয়েছিল। আরনোডের দেখা অনুসরণ করে, অন্যান্যরাও দেখেছে বলে কয়েক সপ্তাহে শত শত রিপোর্ট করেছিল, বেশির ভাগ আমেরিকাতে। এ ধরনের অন্যান্য বিষয়ে রিপোর্টের সংখ্যা বৃদ্ধি হতে শুরু করেছিল। যেমন, ৪ জুলাই, সন্ধ্যাবেলা যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিমান দল ইদাহোর উপর নয়টারও বেশি একই রকম ডিস্ক দেখেছিল।
আমেরিকান ইউএফও গবেষক টেড ব্লোচার, তার সংবাদপত্র প্রতিবেদনে ব্যাপক পর্যালোচনা করেন, ব্লোচার লক্ষ্য করেছিল যে, পরবর্তী কয়েক দিন সর্বাপেক্ষা মার্কিন সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় ‘উড়ন্ত প্লেট’ অথবা ‘উড়ন্ত ডিস্ক’-এর ঘটনায় ভরা ছিল। ৮ জুলাই, এরপর যখন কর্মকর্তা রোসওয়ালের ঘটনাটি সাংবাদিকদের কাছে প্রকাশ করতে শুরু করেছিল, তারা একে একটি পরীক্ষার বস্তুর ধ্বংসাবশেষ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছিল।
যদিও কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি, তারপরও অনেকেই এটিকে ভিন্ন গ্রহের বাসিন্দাদের আকাশযান বলে মনে করেন। আর বিষয়টিকে উড়িয়ে দেবার উপায় নেই। অধিকাংশ বিজ্ঞানীই এই মহাশূন্যে কোথাও না কোথাও অতিমানবীয় বুদ্ধিমান প্রাণীর অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন।
সুতরাং, হঠাত্ কোনো একদিন তাদের সাথে দেখা হয়ে যাবে—এমনটা আমরা আশা করতেই পারি।
মাকড়সার ফসিল নিয়ে গবেষণা
Date:14/05/2011
কোন প্রাণী সবথেকে আগে এসেছে পৃথিবীতে—এমন প্রশ্নের একটাই উত্তর পাওয়া যায়, ডাইনোসার। এই তত্ত্ব নিয়ে আলাপ-আলোচনা ও গবেষণার অন্ত নেই। প্রচলিত রয়েছে হরেক রকমের মতবাদ। ন্যাশনাল জিওগ্রাফি ও ডিসকভারি চ্যানেলগুলোতে অ্যানিমেশনের মাধ্যমে ফসিল গবেষণা করে এসব ডাইনোসরদের প্রতিকৃতি বানিয়ে তাদের আচরণ ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছে অসংখ্যবার। তাদের এই গবেষণা আরো একধাপ এগিয়ে দিতে এবারে পাওয়া গেল ডাইনোসর যুগের মাকড়সার ফসিল। তাও সাধারণ কোনো উপায়ে নয়, আগ্নেয়গিরির ছাইয়ের মাঝে পাওয়া গেছে এই মাকড়সার ফসিল।
সম্প্রতি গবেষকরা ডাইনোসর যুগের বিশালাকৃতির এক মাকড়সার ফসিল খুঁজে পেয়েছেন। নেফিলিয়া জুরাসিকা নামের এই মাকড়সাটির ফসিল মঙ্গোলিয়ার আগ্নেয়গিরির ছাইয়ের মধ্যে চাপা পড়েছিল। জাল বুনতে সক্ষম সাড়ে ১৬ কোটি বছরের প্রাচীন এই মাকড়সার একটি প্রজাতি আজও টিকে আছে।
গবেষকরা আরো জানিয়েছেন, নেফিলিয়া প্রজাতির এই মাকড়সার পায়ে চুলের মতো তন্তু আছে। এই প্রজাতির মাকড়সা পাখি এবং বাদুড় শিকার করতে
পারে এবং এই মাকড়সার বোনা জাল সূর্যের আলোতে স্বর্ণালি রং ধারণ করে। ইন্টারনেটের তথ্যের উপর ভিত্তি করে আরো জানা গেছে, উদ্ধারকৃত ফসিলে দেখা গেছে, এই প্রজাতির মাকড়সার আকার ছিল মানুষের পুরো হাতের থাবার সমান। এর শরীর আড়াই ইঞ্চির মতো প্রশস্ত এবং পায়ের দৈর্ঘ্য ছয় ইঞ্চিরও বেশি। এই প্রজাতির মাকড়সা গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে দেখা যেত।
জানা গেছে, উদ্ধার করা ফসিলটি একটি মেয়ে মাকড়সার। সাধারণত যেকোনো প্রজাতির মেয়ে মাকড়সা পুরুষের চেয়ে আকারে বড় হয়। স্বর্ণজাল তৈরি করতে সক্ষম মাকড়সাটি মধ্য জুরাসিক সময়ের হলেও এটি উদ্ধারকৃত ফসিলের মধ্যে সবচেয়ে পুরোনো নয়। ইংল্যান্ডে খুঁজে পাওয়া ৩১ কোটি বছর আগের Eocteniza silvicola এবং Protocteniza britannica প্রজাতির মাকড়সার ফসিল দুটোই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে পুরোনো। মাকড়সার ফসিল নিয়ে এই গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে ‘বায়োলজি লেটার্স’ সাময়িকীতে।
কালো রঙের গাছ
Date:14/05/2011
যুগ যুগ ধরে পৃথিবীর বাইরের গ্রহগুলোর প্রতি মানুষের আগ্রহের কোনো কমতি নেই। প্রযুক্তির উন্নতির ধারার সাথে সাথে মানুষের মহাকাশ নিয়ে গবেষণার পরিধিও বেড়েছে। পৃথিবী ছাড়াও অন্য এমন কোনো গ্রহ আছে কি না যেখানে বসবাস করা যেতে পারে—এমন ধারণা নিয়ে অনেকেই গবেষণা করে যাচ্ছেন দিনের পর দিন। সমপ্রতি গবেষকরা জানিয়েছেন, পৃথিবীর বাইরে যেসব গ্রহে বসবাস উপযোগী এবং প্রাণধারণের উপযোগী পরিবেশ রয়েছে, সেখানে যে গাছ জন্মাবে তার রং হতে পারে গাঢ় কৃষ্ণবর্ণের। এমনকি এই গাছের ডালপালা এবং এই গাছে ফোটা ফুলের রঙও মানুষের চোখে কেবল কালো অথবা ধূসর রঙটিই ফুটিয়ে তুলতে পারে। আরো জানা গেছে, ভিনগ্রহের উদ্ভিদ বিষয়ে এই গবেষণা করেছেন সেইন্ট অ্যান্ড্রুজ ইউনিভার্সিটির জোত্যির্বিজ্ঞানীরা। গবেষকরা জানিয়েছেন, দুটি সূর্যকে প্রদক্ষিণ করছে এমন লাল বামনে পরিণত হওয়া নক্ষত্রগুলোতে কৃষ্ণবর্ণের বৃক্ষের সন্ধান মিলতে পারে। গবেষকরা জানিয়েছেন, ভিনগ্রহের উদ্ভিদে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় টিকে থাকার জন্য পৃথিবীতে বেড়ে ওঠা উদ্ভিদের মতোই আলোর প্রয়োজন পড়ে। তবে, পৃথিবীতে উদ্ভিদ সূর্যশক্তির সাহায্যে সালোকসংশ্লেষণ করলেও ভিনগ্রহের এসব উদ্ভিদের আলো গ্রহণ প্রক্রিয়াটা আলাদা। কারণ, এখানে উদ্ভিদগুলো একাধিক উত্স থেকে শক্তি সংগ্রহ করতে পারে। আর এসব গ্রহের তাপমাত্রা এবং রং সে উদ্ভিদের বেড়ে ওঠায় প্রভাব ফেলে।
বায়ুমণ্ডল থেকেই বিদ্যুত্ সংগ্রহ
date:14/05/2011
সৌরশক্তি ব্যবহার করে যেমন বিদ্যুত্ উত্পাদন করা যায়, তেমনি বায়ুশক্তি বা আবহাওয়া থেকেও বিদ্যুত্ উত্পাদন সম্ভব। সমপ্রতি ব্রাজিলের ইউনিভার্সিটি অব ক্যাম্পিয়ানস (ইউসি)-এর গবেষক ফার্নান্দো গেলেমবেক বায়ুমণ্ডল থেকেই বিদ্যুত্ সংগ্রহের উপায় উদ্ভাবন করেছেন।
আরো জানা গেছে, গবেষক ফার্নান্দো গেলেমবেক একজন রসায়নবিদ। তিনি ভবিষ্যতের বিকল্প শক্তির উত্স হতে পারে এমন শক্তির উত্স এবং বায়ুমণ্ডল থেকে বিদ্যুত্ সংগ্রহের উপায় নিয়ে গবেষণা করছেন।
গবেষকরা জানিয়েছেন, সৌরশক্তি ব্যবহারে বিদ্যুিবল নিয়ে যেমন ভাবনার প্রয়োজন হয় না, এ ক্ষেত্রেও তেমনটিই ঘটতে পারে।
জানা গেছে, গবেষকরা ধারণা করতেন বায়ুমণ্ডলে ভেসে থাকা পানির কণাগুলো চার্জ নিরপেক্ষ, এমনকি তারা চার্জিত ধূলিকণার সঙ্গে এলেও এই ধর্ম বজায় থাকে। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, এই ধারণা সঠিক নয়। সিলিকা এবং অ্যালুমিনিয়াম ফসফেটের ক্ষুদ্র কণাগুলো আর্দ্র আবহাওয়াতে পজিটিভ এবং নেগেটিভ চার্জে রূপান্তরিত হতে পারে। গবেষকরা জানিয়েছেন, আর্দ্র আবহাওয়ায় এই চার্জিত কণাগুলো সংগ্রহ করেই বিদ্যুত্ উত্পাদন সম্ভব। এই পদ্ধতিতে বিদ্যুত্ উত্পাদনের পদ্ধতিকে গবেষকরা নাম দিয়েছেন ‘হাইগ্রোইলেকট্রিসিটি’ বা আর্দ্র বিদ্যুত্।
আরো জানা গেছে, গবেষকরা এমন একটি পদ্ধতি বের করার চেষ্টা করছেন, যার ফলে আবহাওয়ার বিদ্যুেক বশ করে কাজে লাগানো যাবে এবং বজ্রপাতের বিষয়টি থাকবে না।
স্পন্দনের অপেক্ষায় কৃত্রিম হূিপণ্ড
মানবদেহের জন্য বিজ্ঞানীরা কৃত্রিম হূদযন্ত্র তৈরি করেছেন, এটা সত্যিই আমাদের কাছে ভালো খবর। কেননা এই যন্ত্র বিশ্বের কোটি কোটি হূদরোগীর জন্য সুখ বয়ে আনবে। কৃত্রিম হূদযন্ত্র নিয়ে আমাদের এবারের আয়োজন— বিশ্বে এই প্রথমবারের মতো সফল হতে যাচ্ছে মানবদেহের বাইরে নতুন করে গড়া কোনো হূিপণ্ডে কম্পন সৃষ্টির মতো ঘটনা। যুক্তরাষ্ট্রের পরীক্ষাগারে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে হূিপণ্ড রেখে তার কম্পনের অপেক্ষায় দিন গুণছেন সেই দেশের বিজ্ঞানীরা। এবং তারা আশাবাদী, খুব শিগগিরই এসব হূিপণ্ড সচল হবে। পরীক্ষাটি সফল হলে বিশ্বের কোটি কোটি হূদরোগীর জন্য এটি হবে এক দারুণ সুখবর। মূলত, কয়েকটি দান করা হূিপণ্ড থেকে পেশিকোষ নিয়ে এর সঙ্গে রোগীর স্টেম সেলের সমন্বয় ঘটিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এরপর সবল হূেকাষ তৈরির উপযোগী করে হূিপণ্ডগুলো রেখে দিয়েছেন বিশেষ স্থানে। এ ক্ষেত্রে এমন ব্যবস্থা করা হয়েছে, যাতে ক্রমেই উন্নত পর্যায়ে গিয়ে হূিপণ্ডে আপনাআপনিই স্পন্দন সৃষ্টি হয়। হূিপণ্ড গবেষক মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডরিস টেলর বলেন—এসব হূিপণ্ড পরিণত হচ্ছে, আমরা আশা করছি, কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এগুলোর মধ্যে স্পন্দন দেখা যাবে। তিনি আরো বলেন, এ ধরনের হূিপণ্ডকে কর্মক্ষম করার বেলায় অনেক বাধা রয়েছে, তবে আমি আশাবাদী যে, একদিন হূেরাগে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির দেহে প্রতিস্থাপন করার উপযোগী হূিপণ্ডের পুরোটাই বাইরে থেকে জন্মানো সম্ভব হবে। ডরিস টেলরের ভাষ্যমতে—হূিপণ্ড প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে রোগীকে সাধারণত এমন কিছু ওষুধ খেতে হবে, যা পরবর্তীতে তার জীবনে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। এতে রোগীর উচ্চরক্তচাপ এবং বহুমূত্র রোগ দেখা দিতে পারে, আবার কিডনি অকেজো হওয়ার মতোও জটিলতা দেখা দিতে পারে। কিন্তু রোগীর স্টেম সেল ব্যবহার করে বাইরে থেকে কোনো হূিপণ্ড তৈরি করে তা রোগীর দেহে প্রতিস্থাপন করলে এসব রোগের ঝুঁকি অনেক কমে যেতে পারে। এই গবেষণার ক্ষেত্রে গবেষকরা প্রথমে দাতার হূিপণ্ড নিয়েছেন, তারপর বিশেষ পদ্ধতিতে এর কোষগুলো আলাদা করে ধুয়ে মূল হূিপণ্ডকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছেন, যা স্রেফ একটি আমিষের খাঁচা। গবেষকরা এর নাম দিয়েছেন ‘গোস্ট হার্ট’। এবার এই গোস্ট হার্টের সঙ্গে যোগ হয়েছে হূদরোগে ভোগা রোগীর স্টেম সেল। এভাবেই এই হূিপণ্ডকে নতুন করে জন্মানোর সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
সূর্যের আরো কাছে যাওয়ার উদ্যোগ
সূর্যের আরো কাছাকাছি যাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে নাসা। সূর্যকে খুব নিকট থেকে পর্যবেক্ষণ করার জন্য গাড়ি আকৃতির মানুষবিহীন একটি নভোযান প্রেরণের যাবতীয় পরিকল্পনা গ্রহণ করছে নাসা। সূর্যের উদ্দেশে পাঠানো নভোযানটির নাম ঠিক করা হয়েছে—সোলার প্রোব প্লাস (SPP)। গবেষকরা জানান ২০১৮ সালের মধ্যে এই নভোযানটি মহাশূন্যে পাঠানো যাবে। ১৪০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড ও বেশি তাপ সহ্যক্ষমতা সম্পন্ন এই নভোযানটি সূর্যকে এত নিকট থেকে পর্যবেক্ষণ করবে, যা আগে কখনও সম্ভব হয়নি।
শনির চাঁদে হাইড্রোজেন ভিত্তিক এলিয়েন
সম্প্রতি নাসার গবেষকরা শনির বৃহত্তম চাঁদ টাইটানে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার প্রমাণ পেয়েছেন। গবেষকরা জানান, তারা এমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু সূত্র পেয়েছেন, যার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়, শনির চাঁদেই বাস করছে এলিয়েন। গবেষকরা জানান, চার বিলিয়ন বছর পরে আমাদের সূর্য যখন লাল বামনে পরিণত হবে, তখন টাইটানই হবে বসবাসের আদর্শ স্থান। গবেষকরা নাসার ক্যাসিনি উপগ্রহ থেকে পাওয়া ডাটা বিশ্লেষণ করে টাইটান পৃষ্ঠের জটিল রাসায়নিক চক্রটি বের করেছেন। গবেষকরা আরো জানান, শনির বৃহত্তম এই চাঁদটিতে রয়েছে ঘন আবহাওয়ামন্ডল। আর এই পরিবেশেই শ্বাস নিচ্ছে এবং ভূপৃষ্ঠ থেকে খাদ্য গ্রহণ করে বেঁচে রয়েছে এলিয়েনরা। গবেষকদের দাবি, টাইটান এত শীতল যে, তরল হিসেবে পানির অস্তিত্ব সেখানে থাকার সম্ভাবনা নেই। বরং সেখান হাইড্রোজেন গ্যাস বিস্ফোরিত হচ্ছে এবং ভূপৃৃষ্ঠে এসে তা মিশে যাচ্ছে। আর এই পদ্ধতিটিই টাইটানে প্রাণের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। গবেষকদের মতে, পৃথিবীতে মানুষ যেভাবে অক্সিজেন গ্রহণ করে টিকে আছে, তেমটি টাইটানে তৈরি হয়েছে হাইড্রোজেনভিত্তিক প্রাণ। থ্রিডি লেন্স সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইয়ো স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকরা এমন একটি লেন্স উদ্ভাবন করছেন, যা ক্ষুদ্র বা আণুবীক্ষণিক কোনো বস্তুকে নয়টি আলাদা আলাদা কোণ থেকে দেখাতে পারবে এবং সেই বস্তুর থ্রিডি ছবিও তৈরি করতে পারবে। গবেষকরা জানান, অন্যান্য থ্রিডি ক্যামেরা বা লেন্সের সাহায্যে বস্তুর থ্রিডি ছবি দেখতে অনেক লেন্স বা ক্যামেরা ঘোরানোর প্রয়াজন হয়। কিন্তু এই লেন্সটি এককভাবেই আণুবীক্ষণিক থ্রিডি ছবি দেখাতে পারে।
মানুষের কৃত্রিম ত্বক তৈরি
ইংকজেট প্রিন্টারে কালি দিয়ে আমরা ছাপার বিভিন্ন কাজ করে থাকে। ইংকজেট প্রিন্টারেরর ছাপার এই পদ্ধতিকে অনুসরণ করে বিজ্ঞানীরা মানুষের জন্য কৃত্রিম ত্বক তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছেন। অবশ্য বিজ্ঞানদের এই গবেষণা সফল হওয়ার পথে। সাধারণত সাদা-কালো কিংবা রঙিন সব ছবিই ইংকজেট প্রিন্টারে ছাপা হয়। এই প্রিন্টারের প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এটি কালি স্প্রে করে ছাপার কাজ সম্পন্ন করে। আর এর ফলে এতে ছাপা ছবি বা অন্যকিছু শুকিয়ে যেতে খানিকটা সময় লাগে। ইংকজেট প্রিন্টারের এই বৈশিষ্ট্যই বিজ্ঞানীদের গবেষণার প্রাথমিক রসদ জোগায়। প্রাথমিক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, প্রিন্টারকে যদি মানব শরীরের একটি কোষ দিয়ে তার সঙ্গে কিছু প্রাকৃতিক জেল এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দেয়া হয়, তাহলে এই কোষের সঙ্গে মিলিয়ে সে একজন মানুষের চামড়ার বিকল্প ছেপে দেবে। সত্যিকার অর্থে বিজ্ঞানীদের ধারণাটি পরীক্ষাগারে বাস্তবে রূপ পেয়েছে। ইংকজেট প্রিন্টারের প্রযুক্তিতে, বিকল্প চামড়া তৈরির, সেই যন্ত্রটি মাত্র আধাঘণ্টা সময়ে মানুষের একখানা কান ছেপে দেখিয়েছে। গবেষকদের দাবি ভবিষ্যতে চামড়া এমনকি কার্টিলেজও তৈরি করে দেবে এই প্রযুক্তি। বিজ্ঞানীরা জানান, বিভিন্ন ধরনের দুর্যোগে যেমন—সড়ক দুর্ঘটনা, যুদ্ধক্ষেত্র অগ্নিকাণ্ড অথবা যে কোনো বড় মাপের দুর্ঘটনায় যেসব মানুষ তাদের মূল্যবান অঙ্গপ্রত্যঙ্গ হারান, তাদের নতুন অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা যাবে সহজেই এই নকল চামড়া দিয়ে। এই পদ্ধতির উল্লেখযোগ্য দিক হলো, যার জন্য প্রয়োজন তারই কোষ নিয়ে এই প্রযুক্তি কাজ করবে। অতএব বিকল্প হলেও সেই চামড়া রোগীর শরীরে গেলেই জীবন্ত হয়ে যাবে। ফলে চিকিত্সা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে এই ইংকজেট প্রযুক্তি একটি মাইলফলক হিসেবে তার নাম লেখাতে যাচ্ছে। সম্প্রতি ওয়াশিংটনের বিজ্ঞান কংগ্রেসে এই প্রযুক্তি বিষয়ক বেশকিছু তথ্য প্রকাশ গবেষণা সংশ্লিষ্ট গবেষকরা।
সৌরঝড়ে আঁধারে ডুবে যাবে পৃথিবী!
সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, পৃথিবীর বুকে শিগগিরই সৌরঝড় নেমে আসবে আর এর প্রভাবে এক বৈশ্বিক বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। তাঁদের আশঙ্কা, এই সৌরঝড়ের কারণে মহাকাশে স্থাপিত কৃত্রিম উপগ্রহ এবং বিশ্বজুড়ে বিদ্যুত্ সরবরাহ-ব্যবস্থাপনা বিকল হয়ে যেতে পারে। বিজ্ঞানীরা আসন্ন এই সৌরঝড়ের ব্যাপকতাকে চিন্তা করে একে ‘গ্লোবাল ক্যাটরিনা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। ইতিমধ্যে বিজ্ঞানীরা এই সৌরঝড়ের ফলে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাব্য হিসাব-নিকাশ কষে রেখেছেন। তারা জানান, এতে সারা বিশ্বে অন্তত দুই ট্রিলিয়ন ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হবে। যুক্তরাজ্য সরকারের প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা জন বেডিংটন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য অ্যাডভান্সমেন্ট অব সায়েন্সের বার্ষিক সভায় এ হুঁশিয়ারি দেন। পরে সংশ্লিষ্ট অন্য বিজ্ঞানীরা তার বক্তব্যের সমর্থনে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। বিজ্ঞানীরা জানান, সূর্যের অভ্যন্তরে চলমান অগ্নিঝড়ের দমকা পর্যায়ক্রমে বাড়তে ও কমতে থাকে। প্রতি ১১ বছরে একবার সৌরঝড়ের প্রচণ্ডতা সর্বোচ্চমাত্রায় ওঠে। তারা বলেছেন, হিসাব অনুযায়ী ২০১৩ সালে সর্বোচ্চমাত্রার সৌরঝড় হওয়ার কথা। একেকটি দমকার সঙ্গে প্রচণ্ড তাপবাহী সৌরশিখা সৌরজগতে ছড়িয়ে পড়ে। এইা শিখার সঙ্গে বিদ্যুত্-চৌম্বকীয় তেজস্ক্রিয়তার আণবিক বিস্ফোরণ ঘটে। তেজস্ক্রিয় শিখা যখন পৃথিবীর দিকে আসতে থাকে, তখন বায়ুমণ্ডলের বাইরের পরিমণ্ডল বিদ্যুতায়িত হয়ে ওঠে। এতে ভূ-পৃষ্ঠে থাকা মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও মহাশূন্যে প্রতিস্থাপিত কৃত্রিম জিপিএস (গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম) ভূ-উপগ্রহ এবং অন্যান্য গবেষণা ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সমূহ আশঙ্কা থাকে। উল্লেখ্য, জিপিএস আমাদের প্রাত্যাহিক জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছে। এর সঙ্গে বিমান চলাচল, ইন্টারনেট সেবা, টেলিযোগাযোগ, বিদ্যুত্ সরবরাহ সবকিছু নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এ ব্যবস্থা বিগড়ে গেলে সারা পৃথিবীর যাবতীয় স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রপাতি বিকল হয়ে যাবে। সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বিষয় হলো, সৌরঝড়ে সৃষ্ট প্রচণ্ড শক্তিশালী বিদ্যুত্ তরঙ্গ পৃথিবীর ম্যাগনেটোস্ফেয়ারকে আঘাত করলে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বৈদ্যুতিক লাইন ও গ্যাসের পাইপলাইনেও সে তরঙ্গে স্পৃষ্ট হতে পারে। এর ফলে বিদ্যুত্ ব্যবস্থা অচল হয়ে যেতে পারে। ফলে, গাঢ় অন্ধকারে ডুবে যেতে পারে পৃথিবী। বিজ্ঞানীরা জানান, সম্ভাব্য এই বিপর্যয় থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য যত দ্রুত সম্ভব সৌরঝড়ের তেজস্ক্রিয় প্রবাহ প্রতিরোধক ব্যবস্থা তুলতে হবে।
চাঁদের বুকে মূল্যবান খনিজ পদার্থ
পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ হচ্ছে চাঁদ। এই চাঁদ নিয়ে বিজ্ঞানীদের গবেষণা চলছে নিরন্তর। সম্প্রতি নাসার একদল গবেষক জানিয়েছেন, চাঁদের বুকে শুধু পানিই নয়, রয়েছে সোনা-রুপার মতো মূল্যবান পদার্থও। বিজ্ঞানীরা চাঁদের দক্ষিণ গোলার্ধের ক্যারিয়াস গুহার ভেতর পর্যবেক্ষণ করে পানির সাথে মূল্যবান কিছু ধাতুর সন্ধান পেয়েছেন। এলসিআরও এস এম নভোযানের সাহায্যে ক্যারিয়াস গুহার ধুলা এবং বাষ্প পর্যবেক্ষণ করে গবেষকরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন। গবেষকরা জানিয়েছেন, চাঁদের এই পৃষ্ঠেই পানির সঙ্গে বেশি ঘনত্বের বরফ, পারদ, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, সোনা ও রুপা মিশে রয়েছে। মাইকেল ওয়ারগো বলেন, নাসার বিজ্ঞানীরা চাঁদের বুকে বরফ ও পানির সাথে মূল্যবান ধাতু মিশে থাকার বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছেন। উল্লেখ্য, চাঁদের বুকে বিভিন্ন ধাতুর এই উপস্থিতির দরুণ বিজ্ঞানীরা একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, চন্দ্রপৃষ্ঠ রাসায়নিকভাবে এখনও সক্রিয় রয়েছে।
পৃথিবীতেই ব্ল্যাক হোল
সমপ্রতি উপগ্রহের মাধ্যমে তোলা এক ছবি দেখে গবেষকরা জানিয়েছেন, পৃথিবীতেই রয়েছে ‘ব্ল্যাক হোল’। গবেষকদের মতে, ‘হলবক্স’ নামে পরিচিত মেক্সিকোর একটি দ্বীপের গভীর, পাথুরে এবং পানিপূর্ণ অন্ধকার অঞ্চলটিই পৃথিবীর ‘ব্ল্যাক হোল’।
আরো জানা গেছে, হলবক্স দ্বীপটির ছবি তোলা হয়েছে কোরিয়া মাল্টি-পারপাস স্যাটেলাইট-২ বা কম্পাসাট-২ উপগ্রহের সাহায্যে। হলবক্স দ্বীপটি দৈর্ঘ্যে ২৬ মাইল এবং এটি মূল মেক্সিকো থেকে একটি অগভীর লবণাক্ত জলের হ্রদ দ্বারা আলাদা হয়ে আছে।
ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ইএসএ)-এর গবেষকরা জানিয়েছেন, স্বচ্ছ জলের এই অগভীর হ্রদটির চারপাশে গভীর পাথুরে গুহা থাকায় পানি সবসময় কালো দেখায়। আর এ কারণেই এই দ্বীপটির নাম হলবক্স, মায়া ভাষায় যার অর্থ দাঁড়ায় ব্ল্যাক হোল। এখানেই সবচেয়ে বেশি তিমি-শার্ক দেখতে পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য, ব্ল্যাক হোল হচ্ছে মহাবিশ্বের অতি ভারী বস্তু, যা থেকে আলোও বের হয়ে আসতে পারে না। ব্ল্যাক হোল-এর ভর খুব বেশি হওয়ায় এর মহাকর্ষ বলও অত্যন্ত বেশি। ফলে এর তীব্র আকর্ষণ এড়িয়ে আলোও বাইরে আসতে পারে না।
বায়ুর চাপ-কোথায় কেমন
বাতাসের ওজন অবশ্য খুবই কম। তবু কম হলেও এর একটা ওজন আছে। আর সেজন্যই এর চাপও আছে। কম পরিমাণ বাতাসের চাপ কম। আর বেশি পরিমাণ বাতাসের চাপ বেশি। সমুদ্রের কাছে বাতাস যে সবচেয়ে ঘন, তারও ওজন হচ্ছে জলের ওজনের ৮০০ ভাগের ১২ ভাগ। সমুদ্রপৃষ্ঠে বায়ুর চাপের গড় প্রতি বর্গ সেন্টিমিটারে ১ কিলোগ্রাম। সেই হিসেবে একজন মানুষের শরীরের উপর বায়ুমণ্ডলের চাপ পড়ে প্রায় ১৩,৬২০ কি.গ্রা. (৩,০০০ পাউন্ড) যা চার-পাঁচটা হাতির ওজনের সমান। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে যত ওপরে যাওয়া যাবে, বাতাসের চাপ ততই কমবে। ভূপৃষ্টের কাছাকাছি জায়গায় বায়ুর যে এত চাপ, তাতে তো আমাদের পিষে যাবার কথা। অথচ আমরা সেই চাপ টের পাই না। আমাদের শরীরের ভেতর থেকে একটা চাপ বাইরের দিকে চলে আসে। বাইরের বাতাসের চাপের সঙ্গে সেটা সমান থাকে বলে আমরা দুটো চাপের কোনোটাই টের পাই না। যেমন উপরে উঠে গেলে বাইরের চাপ কমে যায়। শরীরের ভেতরের আর বাইরের চাপের তফাত হয়। দুই মাইলের বেশি উপরে উঠলে সে তফাত্টা বোঝা যায়—মাথা ফাঁকা ফাঁকা লাগতে থাকে। বেশি উপরে উঠলে এই চাপের ফলে মানুষ অজ্ঞান হয়ে যাবে। তাই বেশি উঁচুতে উঠতে হলে বিশেষ এক ধরনের পোশাক পরতে হয়। আবার যে এরোপ্লেন বেশি উঁচু আকাশ দিয়ে চলে, তাতে যাত্রীদের ঘরে বেশি করে হাওয়া পুরে সেখানটার চাপটা একভাবে রাখা হয়। এ রকম ঘরকে বলে ‘প্রেশারাইজ্ড’ কেবিন।